খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া (জন্ম 15 আগস্ট, 1945, দিনাজপুর, পূর্ব বাংলা, ভারত [বর্তমানে বাংলাদেশে]) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ যিনি 1991-96 এবং 2001-06 সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রথম মহিলা ছিলেন এবং তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং নাগরিক অস্থিরতার সময় শাসন করেছিলেন।

 

তৈয়বা ও ব্যবসায়ী ইস্কান্দার মজুমদারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে খালেদা ছিলেন তৃতীয়। 1960 সালে তিনি সরকারি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পরে দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভর্তি হন। 1959 সালে তিনি জিয়া উর-রহমানকে বিয়ে করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে একজন নেতা, তৎকালীন পাকিস্তানের অংশ। 1971 সালে সংগ্রামের সময় তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল, যদিও তিনি রাজনীতিতে অনেকটাই আগ্রহী ছিলেন না, এমনকি তার স্বামী 1977 সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেও। 1981 সালে তার স্বামী সামরিক অফিসারদের দ্বারা নিহত হওয়ার পর, তিনি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হন, এবং 1984 সালে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। 1980-এর দশকে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারের সময় খালেদাকে বারবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু 1991 সালে তিনি বিরোধী দলকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যান এবং প্রধানমন্ত্রী হন।

 

খালেদার প্রথম মেয়াদে তিনি শিল্পের বেসরকারিকরণ এবং বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছিলেন; তার সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং মহিলাদের জন্য উপলব্ধ অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণের দিকেও মনোনিবেশ করেছে। তার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, তবে, 1991 সালে একটি ঘূর্ণিঝড় দ্বারা 130,000 এরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল এবং $2 বিলিয়নেরও বেশি ক্ষতি হয়েছিল। ফেব্রুয়ারী 1996 সালে তিনি অপ্রতিরোধ্যভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে অফিসে জয়লাভ করেন, কিন্তু বিরোধী নেতৃত্বাধীন নির্বাচন বয়কটের কারণে তার বিজয় কলঙ্কিত হয়; বিরোধী দলগুলির আহ্বানে সাড়া দিয়ে, যারা দাবি করেছিল যে সরকার ফলাফল তার পক্ষে কারচুপি করবে, যোগ্য ভোটারদের প্রায় নয়-দশমাংশ বিরত ছিলেন। ধর্মঘট ও প্রতিবাদের তরঙ্গের পর, তিনি পরের মাসে পদত্যাগ করেন। 2001 সালে খালেদা দুর্নীতি ও সন্ত্রাস উভয়ই নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসেন। তবে উভয়ই তার দ্বিতীয় মেয়াদ জুড়ে সমস্যাযুক্ত ছিল। তিনি 2006 সালের শেষের দিকে পদত্যাগ করেন, নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসনের কাছে কর্তৃত্ব প্রদান করেন।

 

2007 সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং একটি সেনা-সমর্থিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। এটি পরবর্তীতে একটি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করে এবং সেপ্টেম্বরে খালেদাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। 2014 সালে তিনি এবং অন্যরা একটি দাতব্য সংস্থার উদ্দেশ্যে তহবিল আত্মসাতের জন্য বিচারে যান৷ তিনি 2018 সালের ফেব্রুয়ারিতে দোষী সাব্যস্ত হন এবং পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে শুরু করেন, যা তাকে বছরের শেষের দিকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অক্ষম করে। রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে খালেদা কোনো অন্যায়ের কথা অস্বীকার করেছেন। অক্টোবরে তাকে দুর্নীতির অতিরিক্ত অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, যখন তার ফেব্রুয়ারিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং সাজা 10 বছর বাড়ানো হয়েছিল। একই মাসে তার ছেলেকে অনুপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 2019 সালের এপ্রিলে খালেদার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে এবং 2020 সালের মার্চ মাসে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় অস্থায়ী ভিত্তিতে কারাগার থেকে মুক্তি পান।

খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান, এবং বাংলাদেশে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দীর্ঘ এবং বিতর্কিত, এবং তিনি তার সময়ে দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

 

আপনি কি তার সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতে চান বা আলোচনা করতে চান?

খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের আগস্টে তার বয়স হবে ৭৯ বছর।

খালেদা জিয়ার জন্মস্থান হলো জিয়াউর রহমানের বাসভবন, দিনাজপুর, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)।

খালেদা জিয়ার স্বামীর নাম জিয়াউর রহমান। তিনি বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া তার দুই সন্তানসহ ঢাকায় ছিলেন। সেই সময় তার স্বামী জিয়াউর রহমান পাকিস্তানী সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়কাল ঢাকায় অবরুদ্ধ অবস্থায় কাটান।