" "

Dream BPT

প্রতিবেদন

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, সংবাদ প্রতিবেদন

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়মগুলি অনুসরণ করে একটি স্পষ্ট, তথ্যপূর্ণ ও আকর্ষণীয় প্রতিবেদন তৈরি করা যায়। নিচে সংবাদ প্রতিবেদন লেখার মূল ধাপগুলি তুলে ধরা হলো:
 
১. শিরোনাম (Headline)
– সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয়: শিরোনাম হতে হবে সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয় যাতে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
– প্রধান তথ্য: শিরোনামে প্রধান তথ্যটি উল্লেখ করুন যা পুরো প্রতিবেদনের সারমর্ম প্রকাশ করবে।
 
২. লিড (Lead)
– মূল পয়েন্ট: প্রথম প্যারাগ্রাফে (লিড) প্রধান তথ্য বা ঘটনার সারাংশ তুলে ধরুন। সাধারণত ২৫-৩০ শব্দে লিখে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে উল্লেখ করতে হয়।
৫টি W এবং ১টি H: কে, কী, কোথায়, কখন, কেন এবং কীভাবে (Who, What, Where, When, Why, How) এর উত্তর লিডে দিন।
 
৩. দেহ (Body)
– বিস্তারিত বর্ণনা: লিডের পরের অংশে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিন।
– অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: পরবর্তী অনুচ্ছেদগুলোতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো যুক্ত করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শুরুতে এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পরে রাখুন।
– বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: ঘটনার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরুন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উক্তি এবং মন্তব্য যুক্ত করুন।
 
৪. ব্যাকগ্রাউন্ড তথ্য
– প্রসঙ্গ ও প্রেক্ষাপট: ঘটনার প্রসঙ্গ এবং প্রেক্ষাপট বর্ণনা করুন যাতে পাঠক পুরো ঘটনাটি ভালোভাবে বুঝতে পারে।
– আগের ঘটনাবলী: যদি এই ঘটনা কোনো পূর্বের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত হয়, তাহলে সেই সম্পর্ক উল্লেখ করুন।
 
৫. উপসংহার (Conclusion)
– শেষ মন্তব্য: প্রতিবেদনের শেষে এমন একটি মন্তব্য যোগ করুন যা পুরো প্রতিবেদনটি সুন্দরভাবে সমাপ্ত করে।
– ভবিষ্যতের নির্দেশনা: যদি ঘটনা সম্পর্কে কোনো ভবিষ্যতের নির্দেশনা বা প্রেডিকশন থাকে, তা উল্লেখ করতে পারেন।
 
অতিরিক্ত টিপস
– স্পষ্টতা ও সরলতা: ভাষা স্পষ্ট ও সরল হওয়া উচিত যাতে সকল পাঠক সহজে বুঝতে পারে।
– প্রমাণ ও উৎস: যেখানে সম্ভব, সঠিক তথ্য ও প্রমাণ যোগ করুন এবং উৎস উল্লেখ করুন।
– স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা: প্রতিবেদন লিখতে গেলে ব্যক্তিগত মতামত পরিহার করুন এবং নিরপেক্ষভাবে ঘটনাটি তুলে ধরুন।
 
উদাহরণ:-
শিরোনাম:
রাজধানীতে নতুন মেট্রোরেল প্রকল্পের উদ্বোধন
লিড:
ঢাকা, ২৭ মে ২০২৪ (বাসস): আজ রাজধানীতে নতুন মেট্রোরেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পটি রাজধানীর যানজট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
দেহ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর মতিঝিলে নতুন মেট্রোরেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এই প্রকল্পের আওতায় মেট্রোরেল লাইন-৬ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ তৈরি করা হয়েছে।
 
মেট্রোরেল প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৬ সালে এবং মোট খরচ ধরা হয় ২১ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
 
এভাবে সংবাদ প্রতিবেদন লেখার মাধ্যমে তথ্যগুলি সঠিকভাবে উপস্থাপন করে পাঠকদের জানানো যায়।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন

শিরোনাম:
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চাপ বৃদ্ধি
লিড:
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচের চাপ বাড়ছে, যা স্বল্প ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেহ:
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানি, গ্যাস, এবং অন্যান্য বস্ত্রসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ:
১. জ্বালানির দাম বৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রভাব দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে পড়ছে। তেলের দাম বাড়ার ফলে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে, যা সব ধরনের পণ্যের মূল্যে প্রভাব ফেলেছে।
২. সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত: কোভিড-১৯ মহামারীর পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের সমস্যা এবং পরিবহন সংকটের ফলে পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে, যা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ।
৩. মুদ্রাস্ফীতি: সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পণ্যের দাম বাড়ানোর আরেকটি কারণ।
৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগ: বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষি উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে, যার ফলে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
 
জনজীবনে প্রভাব:
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য এটি বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক পরিবার তাদের দৈনন্দিন বাজেট পুনর্বিন্যাস করতে বাধ্য হচ্ছে এবং কম দামে নিম্নমানের পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
 
একজন গৃহিণী রোকসানা বেগম বলেন, “আগে যেটা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন সেটার দাম ১৫০ টাকা হয়ে গেছে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য জীবনযাত্রা চালিয়ে যাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”
 
সরকারের পদক্ষেপ:
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। খাদ্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারি সংস্থাগুলো কাজ করছে। এছাড়া, বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রিও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
 
বিশেষজ্ঞদের মতামত:
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো, কৃষিখাতে উন্নয়ন এবং সরবরাহ চেইনকে কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতি আরও সুসংহত করতে হবে।
 
উপসংহার:
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতি গ্রহণের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। এ সময়ে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয় এবং দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে।
 
এভাবেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা যায় যা সমস্যার মূল কারণ, জনজীবনে প্রভাব, সরকারের পদক্ষেপ এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরে।

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রতিবেদন

শিরোনাম:
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদযাপন
লিড:
বাংলাদেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে উদযাপিত হলো বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
দেহ:
গতকাল দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উদযাপিত হলো বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সকাল ৯টায় অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, যিনি শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতার গুরুত্ব সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান:
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা শারীরিক কসরত ও মার্চপাস্ট প্রদর্শন করে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, “ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক উন্নতির জন্য অপরিহার্য। এটি দলগত কাজ ও নেতৃত্বের গুণাবলি উন্নয়নে সহায়ক।”
 
প্রতিযোগিতা ও ইভেন্ট:
ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করা হয়, যেমন:
– ১০০ মিটার দৌড়: ছেলেদের ১০০ মিটার দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন দশম শ্রেণীর ছাত্র রাকিব হাসান।
– ২০০ মিটার দৌড়: মেয়েদের ২০০ মিটার দৌড়ে বিজয়ী হন নবম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার।
– লং জাম্প: লং জাম্পে প্রথম স্থান অধিকার করেন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মাহমুদুল হাসান।
– রিলে রেস: রিলে রেসে দশম শ্রেণীর দল বিজয়ী হয়।
– শারীরিক কসরত: বিভিন্ন গ্রেডের শিক্ষার্থীরা শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে সকলকে মুগ্ধ করে।
 
পুরস্কার বিতরণী:
বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া ও শিক্ষায় সমানভাবে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
 
শিক্ষার্থীদের অনুভূতি:
একজন বিজয়ী ছাত্র রাকিব হাসান বলেন, “এই প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি এবং আজকের দিনটি আমাদের জন্য বিশেষ।”
 
আয়োজকদের মন্তব্য:
অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির প্রধান বলেন, “আমরা প্রতি বছর এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলার জন্য। ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আমরা এই ধরনের ইভেন্টগুলো চালিয়ে যাব।”
 
উপসংহার:
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উজ্জ্বল দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা ও দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছে এবং সকলে মিলে একটি সুন্দর ও আনন্দমুখর দিন উপভোগ করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতি ও উদ্বোধনী বক্তব্য শিক্ষার্থীদের আরও অনুপ্রাণিত করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রীড়া চেতনা ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করবে।
 
এভাবে কোনো নির্দিষ্ট বিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ না করেও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করা যায়, যা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top