" "

Dream BPT

রথযাত্রা 2024

রথযাত্রা কবে, রথযাত্রা 2024 তারিখ

2024 সালে রথযাত্রা 7 জুলাই তারিখে অনুষ্টিত হবে। রথযাত্রা, যা ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রার রথে করে মন্দির থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার উৎসব, পুরিসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত ধুমধামের সাথে পালিত হয়।

রথযাত্রা 2024

উল্টো রথযাত্রা কবে, উল্টো রথযাত্রা ২০২৪ তারিখ

সাধারণ রথযাত্রার আট দিন পর উল্টো রথযাত্রা উদযাপিত হয় । 2024 সালে উল্টো রথযাত্রা 15 জুলাই তারিখ (সোমাবার) এ অনুষ্টিত পালিত হবে।

উল্টো রথযাত্রা কি

উল্টো রথযাত্রা, একটি হিন্দু ধর্মীয় উৎসব যা রথযাত্রার শেষ দিনে উদযাপিত করা হয়। রথযাত্রা উৎসবে, ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে একটি রথে করি তাদেরকে মন্দির থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্টো রথযাত্রার দিনে আবার সেই দেবতাদেরকে মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়, তার জন্য এটাকে উল্টো রথযাত্রা বলা হয়।

ওড়িষার পুরি শহরে এই উৎসবটি অনেক বড় আকারে অনুষ্টিত হয়, কারণ পুরি শহরে ভগবান জগন্নাথের প্রধান মন্দির অবস্থিত। উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠানে ভক্তরা রথ টেনে মন্দির ফিরিয়ে নিয়ে যান ও এই সময়ে নানা ধর্মীয় অনুষ্টান, গান এবং নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।

জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা

রথযাত্রা 2024

জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা হিন্দু ধর্মের একটি প্রধান উৎসব যা ভগবান জগন্নাথ, তাঁর ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রার স্মিতিতে পালিত হয়। এই উৎসবটি মূলত ওড়িশার পুরি নগরে সবচেয়ে ধুমধাম ভাবে অনুষ্টিত হয়। যেখানে জগন্নাথ মন্দির অবস্থিত।

রথযাত্রার চমু সারাংশ:

  1. উৎসবের কাল: রথযাত্রা আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে পালিত হয়, যা সাধারণত জুন বা জুলাই মাসে পড়ে।
  2. রথ: উৎসবের মূল আকর্ষণ হইয়েছে তিনটা বিশাল রথ, যা কাঠ দিয়ে নির্মিত ও সুসজ্জিত হয়। প্রতিটি রথে আলাদা আলাদা দেবতা অবস্থান করেন- জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।
  3. প্রকরণ: এই দিনে দেবতাদের রথে বসিয়ে মামা বাড়ি (গুন্ডিচা মন্দির) নিয়ে যাওয়া হয়। হাজার হাজার ভক্ত এই রথ টেনে নিয়ে যান ও এই সময়ে চারিদিকে ধর্মীয় গান এবং নাচের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
  4. উল্টো রথযাত্রা: উল্টো রথযাত্রা পালিত হয় রথযাত্রার আট দিন পরে। যেদিন দেবতাদেরকে আবার মূল মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়।

রথযাত্রা উপলক্ষে পুরী নগরে ও বিশ্বের অনেক স্থানে প্রচুর পরিমাণের ভক্ত রয়েছেন। এটি শুধুমাত্র একটি  ধর্মীয় অনুষ্টান নয়, বরং একটি সাংস্কিতিক উৎসব হিসেবেও জানাজায়। এই উৎসবে ভক্তরা তাঁদের ভক্তি প্রকাশের পাশাপাশি আনন্দ- উল্লাসে মেতে ওঠেন।

রথযাত্রার ইতিহাস

রথযাত্রার 2024
নিম্নতে রথযাত্রার ইতিহাসের একটা চমু সারাংশ দেওয়া হলো:
রথযাত্রা হলো একটা জনপ্রিয় হিন্দু ধর্মের উৎসব। যেটানাকি ভগবান জগন্নাথ, তিনির ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রার সম্মানে উদযাপিত করা হয়। এই উৎসবটি মূলত ভারত এবং বাংলাদেশ এ পালিত করা হয়। গ্রাম, নগর, শহর সব এলাকাতে পালিত করা হয়। রথযাত্রার ইতিহাস অথবা বুরঞ্জী অনেক বছর পুরানা যা ভারতীয় সভ্যতা- সংস্কিতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যর সাথে গভীরভাবে জড়িত।
 
প্রাচীন উৎস ও ঐতিহাসিক বর্ণনা:
বিভিন্ন মিথ এবং পুরাণে রথযাত্রার প্রাচীন উৎস সম্পর্কে অনেক কিছু উল্লেখ করা হয়েছে।এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো “স্কন্দ পুরাণ” ও “পদ্ম পুরাণ”। জগন্নাথ দেবের মন্দির ও রথযাত্রার উদ্ভব র বিষয়ে বিভিন্ন কথা এই ধর্মগ্রন্থ গুলিতে লেখা হয়েছে।
 
কিংবদন্তী ও পুরাণ:
পুরাণ মতে, দ্বাপর যুগে ভগবান কৃষ্ণ যখন এই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়ে নেন, তখন তাঁর পবিত্র দেহাংশ নিয়ে দেবতারা এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটান। তাঁর অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায়, তাঁর হৃদয়াংশ মাটির মধ্যে মিশে যায় না ও সেটি পুনরায় সন্নিবেশিত হয় জগন্নাথ মূর্তিতে। আর এই মূর্তির রথযাত্রার মাধ্যমে ভগবান কৃষ্ণের ভক্তরা তাঁর দর্শন লাভ করেন।
 
রথযাত্রার মন্দির ও রথ:
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি 12তম শতাব্দীতে নির্মিত করা হয়েছিল, গঙ্গা রাজবংশের রাজা অনন্তবর্মন চোড়গঙ্গ দেব এই মন্দির প্রতিষ্টার কাজ শুরু করেন। এই মন্দিরটি প্রতিষ্টার পর এটা একটি হিন্দু ধর্মের চার ধামের হিসেবে বিবেচিত।
 
রথের বিবরণ
রথযাত্রায় ব্যবহৃত তিনটি রথ বিশাল ও সুসজ্জিত কাঠের তৈরী। প্রতিটি রথের জন্য বিশেষ নাম ও বিভিন্ন আকার রয়েছে:
1. নন্দীঘোষ রথ: এটি ভগবান জগন্নাথের রথ। রথটির উচ্চতা প্রায় 45 ফুট ও এতে 16টি চাকা রয়েছে।
2. তালধ্বজ রথ: এটা হলো বলরামের রথ, এই রথ টার উচ্চতা হলো 44 ফুট ও এটাতে 14টি চাকা রয়েছে।
3. দর্পদলন রথ: এটা হয়েছে সুভদ্রার রথ, রথটির উচ্চতা হলো 43 ফুট ও এটাতে 12 টি চাকা রয়েছে।
 
রথযাত্রার আনুষ্টানিকতা ও কার্যক্রম:
অনেক পরিমানের ভক্ত সমবেত হন রথযাত্রা উপলক্ষে। এই উৎসবটি মূলত প্রায় 10 দিন পযন্ত উদযাপিত হয়, যার মাজে মূল দিনটি হলো রথযাত্রার দিন। রথযাত্রার সাথে সাথে আরো অনেক ধর্মীয় আচার-অনুষ্টান পালিত করা হয়।
চন্দন যাত্রা:
চন্দন যাত্রা রথযাত্রার তৈরী হিসেবে উদযাপিত করা হয়। এই যাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম, ও সুভদ্রাকে চন্দন পেস্ট দিয়ে স্মান করানো হয় ও এটি প্রায় 10 দিন ধরে চলে। এই সময়ে ভক্তরা দেবতাদের চন্দন পেস্ট দিয়ে স্মান করানোর পর বিশেষ ভোগ নিবেদন করেন।
স্মান পূর্ণিমা:
স্মান পূর্ণিমা রথযাত্রীর 15 দিন আগে পালিত করা হয়, এই দিনটিতে 108 টি কলসিতে জল ভরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্মান করানো হয়। এই স্মানের পর দেবতার সব মূর্তিগুলি সাধারণ মানুষের পাসে কিছুদিনের জন্য প্রদর্শিত হয় না, যা অনবসার নামে পরিচিত।
রথযাত্রার দিন:
রথযাত্রার সময় ভক্তরা বিশাল সমাবেশে অংশ নেন ও দেবতাদের রথ টেনে নেন। এই দিনে সবদিকে ধর্মীয় গান, নৃত্য ও ফুর্তিতে ভোরে ওঠে। রথগুলি মূল মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়, যা প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
গুন্ডিচা মন্দির:
গুন্ডিচা মন্দিরকে জগন্নাথের মামা বাড়ি বলা হয়। রথযাত্রার দিন দেবতারা এখানে প্রায় 8 দিন অবস্থান করে থাকেন। এই দিনে প্রচুর মাত্রাত ভক্ত গুন্ডিচা মন্দিরে আসে দর্শন লাভ করেন ও বহু ধরণের আচার -অনুষ্টান অংশ নেন।
উল্টো রথযাত্রা:
রথযাত্রার আট দিন পর উল্টো রথযাত্রা অনুষ্টিত হয়। এই সময়ে দেবতাদের রথে বসিয়ে আবার প্রধান মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়। রথযাত্রার মোতে এই উৎসবটাও অনেক অনেক ধূমধাম এবং ফুর্তিতে পালিত করা হয়।
রথযাত্রার বৈশ্বিক প্রভাব:
পুরীর রথযাত্রা কেবলমাত্র পুরী বা ওড়িশা বা ভারতে সীমাবদ্ব নয়, এটি এখন বিশ্বব্যাপী একটি উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পরিগনিত। বিশ্বের অনেক দেশে এই উৎসবটা বড় আকারে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। এই সব এলাকাতে ভক্তরা একই আগ্রহ, মনোযোগ, ফুর্তি এবং সম্মানের সাথে এই বিশেষ জনপ্রিয় রথযাত্রা পালন করা হয়।
রথযাত্রার সামাজিক সংহতি:
রথযাত্রা একটি বড় সামাজিক সিংহলতার প্রতীক। এই উৎসবের ধারা সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ একত্রিত হন ও একসাথে অনেক ফুর্তি, সন্মান, এবং ভাইচারার মাধ্যমে পালন করেন। যানাকি সমাজে এক মধুর ভাব বৃদ্ধি করে।
মানুষের মাজে শান্তি- সিঙ্খলা গড়ে ওঠে, তাই সমাজের জন্য লাভজনক ও সফলদায়ক।
 
উপসংহার:
রথযাত্রা হিন্দু ধর্মের একটা অনেক জনপ্রিয় উৎসব। যেটা নাকি ভগবান জগন্নাথের ভক্তদের জন্য একটি অন্যতম আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এই উৎসবটির ইতিহাসের গুরুত্ব বহুত বেসি এবং অনেক গভীর, যা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় গুরুত্বর সাথে বিশেষ ভাবে জড়িত। রথযাত্রা কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্টান নয়, এটি ভক্তদের জীবনের একটি অবিচ্ছদ্য অংশ, যা তাঁদের ভক্তি, নৈতিকতা, সন্মান, বিশাশ্ব এবং আধ্যাত্মিক তার চিহ্ন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top