" "

Dream BPT

বিবাহের খুতবা, বিবাহের খুৎবা

বিবাহের খুতবা হলো মুসলমানদের বিবাহ অনুষ্ঠান শুরু করার আগে প্রদত্ত একটি ধর্মীয় ভাষণ বা বক্তব্য। এটি সাধারণত মসজিদে বা বিবাহের অনুষ্ঠানে ইমাম বা বিবাহ সম্পাদনকারী ব্যক্তির দ্বারা পাঠ করা হয়। বিবাহের খুতবার উদ্দেশ্য হলো নবদম্পতিকে ইসলামের আলোকে বিবাহের গুরুত্ব ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা।
একটি সাধারণ বিবাহের খুতবার উদাহরণ নিম্নরূপ হতে পারে:
 
আলহামদুলিল্লাহ! আমরা আল্লাহ্‌র প্রশংসা করি এবং তার সাহায্য ও ক্ষমা চাই। আল্লাহ্‌ যাকে সঠিক পথ দেখান, কেউ তাকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে না, এবং যাকে আল্লাহ্‌ বিপথে নিয়ে যান, কেউ তাকে সঠিক পথে আনতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, এবং মুহাম্মদ (সা.) তার বান্দা এবং রাসূল।
ইয়া আইয়্যুহা আন-নাস! আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন করো এবং সত্য কথাবলুন। আল্লাহ্‌ তার বান্দার জন্য ভালো জীবন প্রস্তুত করেছেন। তিনি বলেন, “আল্লাহ্‌ তোমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি করেছেন।”
ইয়া আইয়্যুহা আল্লাজিনা আমানু! আল্লাহ্‌র নির্দেশাবলী মেনে চলুন এবং বিয়ের পবিত্র বন্ধনকে সম্মান করুন। নবী করিম (সা.) বলেছেন, “বিবাহ হলো আমার সুন্নত, আর যারা আমার সুন্নত থেকে বিমুখ, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
 
এই খুতবার মাধ্যমে নবদম্পতিকে ইসলামের নির্দেশাবলী মেনে চলার উপদেশ দেওয়া হয়, এবং তাদের বিবাহিত জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।

বিবাহ কি

বিবাহ একটি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেখানে একজন পুরুষ ও একজন মহিলা পরস্পরের জীবনসঙ্গী হিসেবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এটি শুধু একটি সামাজিক প্রথা নয়, বরং একটি ধর্মীয় ও আইনগত স্বীকৃত সম্পর্ক।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি 2024

বাংলাদেশে 2024 সালে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করতে হলে সাধারণত স্থানীয় নিবন্ধন অফিস বা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, কারণ এটি সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে সাধারণত বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারণ করা হয় বিবাহের সময় এবং স্থান অনুযায়ী। কিছু সাধারণ ফি হতে পারে:
  1. সাধারণ বিবাহ রেজিস্ট্রেশন: এটি সাধারণত ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
  2. বিশেষ বিবাহ রেজিস্ট্রেশন: যদি বিবাহ নিবন্ধন অফিসের বাইরে অন্য কোনো স্থানে করা হয়, তাহলে অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য হতে পারে।
  3. অতিরিক্ত সার্ভিস ফি: যদি কোনো বিশেষ পরিষেবা বা দ্রুত রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হয়, তবে এর জন্যও অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য হতে পারে।
সঠিক এবং আপডেটেড তথ্যের জন্য আপনার স্থানীয় বিবাহ রেজিস্ট্রেশন অফিস বা ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করা উচিত। আপনি তাদের ওয়েবসাইটেও তথ্য খুঁজে পেতে পারেন, যদি তারা অনলাইন সেবা প্রদান করে থাকে।
 

বিবাহ পড়ানোর নিয়ম

বিবাহ পড়ানোর নিয়ম ইসলামে বিশেষভাবে মান্য। বিবাহ অনুষ্ঠানের সময় মুসলিম মুল্লা বা কাজী বিবাহ পড়ানোর জন্য একটি স্পষ্ট নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন। বিবাহের অনুষ্ঠানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা এবং নিয়ম রয়েছে:
  1. ইজাব: বিবাহের অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয় এবং নবদম্পতিরা প্রকাশ্যে ইজাব (স্বীকৃতি) দেয়া হয়। ইজাবের পরে যদি উত্তরদাতা একটি ‘কবুল’ বা স্বীকৃতি দেয়, তবে বিবাহ সিদ্ধি হয়।
  2. মেহর: মেহর হলো নারীর সুরক্ষিততা ও আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্বামী দ্বারা দেওয়া অর্থ বা আনুমোদিত পণ্য। মেহর বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয় বিবাহের অনুষ্ঠানে।
  3. শুভ সময়: বিবাহ সময় সাধারণত সকালের সময় সূর্যোদয় থেকে প্রারম্ভ হয়। ইসলামে এটি অত্যন্ত শুভ মনে হয়।
  4. সাক্ষী ও সাক্ষাৎকার: বিবাহের সময় কমপক্ষে দুই সাক্ষীর উপস্থিতি প্রয়োজন। তারা সাক্ষ্য দিতে উদ্বুদ্ধ থাকেন যে, বিবাহের সময় সম্পূর্ণ নিয়মানুযাযী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
  5. বিবাহ খুতবা: বিবাহ খুতবা অনুষ্ঠানে বলা হয় যে, বিবাহের উদ্দেশ্য ও নিশ্চিতির প্রকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও, একটি বিবাহ প্রথা
 

বিবাহ স্মরণিকা

বিবাহ স্মরণিকা হলো বিবাহ অনুষ্ঠানের একটি স্মৃতিচিহ্ন, যা সাধারণত অতিথিদেরকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়। এটি একটি ছোট্ট উপহার বা বস্তু হতে পারে যা অতিথিরা বিবাহের স্মৃতি হিসেবে নিজেদের কাছে রাখতে পারেন।
 

বিবাহ স্মরণিকার ধরন

  1. ব্যক্তিগতকৃত উপহার:
    • মিনি ফটো ফ্রেম: নবদম্পতির ছবি সম্বলিত ছোট ফটো ফ্রেম।
    • পার্সোনালাইজড কিপসেক বক্স: নবদম্পতির নাম ও বিবাহের তারিখ খোদাই করা ছোট্ট বাক্স।
    • মুদ্রাঙ্কিত মগ বা কাপে: নবদম্পতির নাম ও বিবাহের তারিখ মুদ্রাঙ্কিত।
  2. প্রাকৃতিক উপহার:
    • ছোট গাছ বা সাকুলেন্ট: ছোট পটে গাছ বা সাকুলেন্ট, যা অতিথিরা তাদের বাড়িতে রাখতে পারেন।
    • হাতের তৈরি সাবান বা মোমবাতি: প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি সাবান বা মোমবাতি।
  3. প্রয়োজনীয় উপহার:
    • নোটবুক বা ডায়েরি: নবদম্পতির নাম ও বিবাহের তারিখ সহ ছোট নোটবুক বা ডায়েরি।
    • পকেট মিরর বা কীচেন: ব্যবহারিক ও ব্যক্তিগতকৃত পকেট মিরর বা কীচেন।
  4. মিষ্টান্ন ও খাবার:
    • চকলেট বা মিষ্টি: ছোট বক্সে বিভিন্ন স্বাদের চকলেট বা মিষ্টি।
    • জ্যাম বা মধুর ছোট জার: ঘরে তৈরি বা কাস্টমাইজড জ্যাম বা মধু।
  5. স্মারক:
    • ছোট্ট কার্ড: ধন্যবাদ জানিয়ে একটি ছোট্ট কার্ড, যেখানে নবদম্পতি তাদের অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
    • ফটো বুকমার্ক: নবদম্পতির ছবি ও বিবাহের তারিখ সহ বুকমার্ক।
  •  

বিবাহ স্মরণিকা তৈরির টিপস

  1. ব্যক্তিগত স্পর্শ: স্মরণিকা ব্যক্তিগতকৃত হলে অতিথিরা তা বেশি পছন্দ করবেন।
  2. বাজেটের মধ্যে থাকা: স্মরণিকা নির্বাচনের সময় বাজেটের দিকে খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
  3. উপযোগিতা: স্মরণিকা এমন কিছু হওয়া উচিত যা অতিথিরা ব্যবহার করতে পারেন বা যেটি তাদের কাছে স্মৃতিস্বরূপ থাকতে পারে।
  4. সাজানো: স্মরণিকা সুন্দরভাবে প্যাকেজিং করা হলে তা আরও আকর্ষণীয় দেখায়।
বিবাহ স্মরণিকা নবদম্পতির জন্য একটি সুন্দর উপায় তাদের বিশেষ দিনের স্মৃতি অতিথিদের সাথে ভাগাভাগি করার। এটি অতিথিদের ধন্যবাদ জানাবার একটি ছোট্ট কিন্তু আন্তরিক উপায়।
 

ইসলামে বিবাহের গুরুত্ব

ইসলামে বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র সম্পর্ক। এটি আল্লাহর একটি মহান অনুগ্রহ এবং সুন্নত। ইসলামে বিবাহের মাধ্যমে সামাজিক ও নৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হয় এবং এটি মানব জাতির প্রজননের একটি বৈধ পদ্ধতি।

বিবাহের উদ্দেশ্য

  1. পারস্পরিক সহযোগিতা: একজন পুরুষ ও একজন মহিলা পরস্পরকে সহায়তা করে এবং সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়।
  2. পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্মান: বিবাহিত দম্পতি পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করে।
  3. সন্তান জন্মদান ও লালনপালন: সন্তান জন্ম দিয়ে তাদের ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা।
  4. সামাজিক বন্ধন: বিবাহ সমাজের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করে।

বিবাহের প্রক্রিয়া

  1. কাবিননামা: একটি আইনি দলিল যা বিবাহ সম্পাদনের শর্তাবলী ও বিবাহের অর্থনৈতিক দিকগুলি নির্ধারণ করে।
  2. ওয়ালী (অভিভাবক): কনের জন্য একজন ওয়ালী বা অভিভাবকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
  3. দুজন সাক্ষী: বিবাহ সম্পাদনের জন্য দুইজন মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সাক্ষী থাকা আবশ্যক।
  4. মহর (দেনমোহর): কনের জন্য বর কর্তৃক নির্ধারিত একটি অর্থনৈতিক অনুদান যা কনে নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারে।
  5. ইজাব ও কবুল (প্রস্তাব ও গ্রহণ): বর ও কনে পরস্পরের সম্মতিতে ইজাব (প্রস্তাব) ও কবুল (গ্রহণ) করে বিবাহ সম্পাদন করেন।

বিবাহের গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি

  • কুরআন: “তারা বলে, হে আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রীদের এবং আমাদের সন্তানদের আমাদের জন্য চোখের শীতলতা কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকিদের ইমাম কর” (সূরা আল-ফুরকান: ৭৪)।
  • হাদিস: নবী করিম (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করতে সক্ষম, তারা বিবাহ করুক। কারণ এটি দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে” (বুখারি ও মুসলিম)।
বিবাহের মাধ্যমে এক নতুন জীবন শুরু হয় যা পরিবার ও সমাজের ভিত্তি মজবুত করে। এটি একটি সুন্দর ও পবিত্র সম্পর্ক যা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top